ডেইলি কাগজ প্যারিস প্রতিনিধি সংবাদদাতা কাওছার আদিল চৌধুরী তার এক প্রতিবেদনে জানান যে, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের নিহত শহীদদের স্মরণে শহীদ মিনার প্রথম নির্মিত হয়েছিল ঢাকায়। এরপর তা দেশে এবং দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশের মাটিতে বিভিন্ন দেশে সেটা নির্মিত হয়েছে। বিশ্বের বহু দেশে শহীদ মিনার স্থাপিত হয়েছে। যেমন শহীদ মিনার রয়েছে লন্ডনের হুয়াইটচ্যাপেল এলাকায় ,যেটি সেখানে যারা ভ্রমণ করেছেন তারা দেখেছেন। দীর্ঘদিন যাবত শহীদ মিনার নির্মাণ করার প্রচেষ্টা চলছিল ফ্রান্সে। কিন্তু সেটা সম্ভব হচ্ছিল না। তবে দু বছর আগে প্যারিসের রাজধানী প্যারিস থেকে৮০০ মাইল দূরে তুলুস শহরে প্রথম শহীদ মিনার নির্মিত হয়। এরপর ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসএ একটি শহীদ নির্মাণ করার স্বপ্ন দেখতে শুরু করে এখানে বাংলাদেশী কমিউনিটি। সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপান্তরিত হয়েছে গত রবিবার ৮ ই অক্টোবর। এই দিন সকালে প্রবাসী বাংলাদেশী কমিউনিটি এবং স্থানীয় ফরাসি মেয়র এর উদ্যোগে উদ্বোধন করা হয় এই শহীদ মিনারের। দল মত নির্বিশেষে সেখানে হাজার হাজার প্রবাসীরা শহীদ মিনারে তারা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। যদিও অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার জন্য বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছিল।কিন্তু এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অংশগ্রহণ করেননি। তারা মনে করেন এই শহীদ মিনার নির্মাণের ইতিহাসে ভাষা আন্দোলনের সাথে ফরাসি বিপ্লবের সমন্বয় আনার চেষ্টা করা হয়েছে , যা সঠিক নয়। তাছাড়া তারা আরো মনে করেন এটা বাংলা ভাষার প্রতীক, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রতীক নয়। তবে ফ্রান্সের বাংলাদেশের বিভিন্ন কমিউনিটি এবং সংগঠনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন এবং তারা শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
শহীদ মিনার উদ্বোধন করেন এই এলাকার মেয়র এবং শহীদ মিনার বাস্তবায়ন কমিটির উপদেষ্টা এনায়েতুল্লাহ ,বাঙালি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি। আগামী বছরের একুশে ফেব্রুয়ারি থেকে এই শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন প্রবাসী বাংলাদেশীরা। শহীদ মিনার বাস্তবায়ন কমিটির উপদেষ্টা কাজী এনায়েতুল্লাহ বলেন , বিশ্বের অন্যতম সাংস্কৃতিক কেন্দ্র প্যারিসের বুকে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির নিদর্শন হয়ে থাকবে এই শহীদ মিনারটি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেশে-বিদেশি বিভিন্ন অতিথি স্থানীয় এলাকার মেয়র ,ফ্রান্সের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা , গণমাধ্যম কর্মী ,সাংস্কৃতিক দলের কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। ফ্রান্সের তুলুসের স্থায়ী শহীদ মিনারের অন্যতম উদ্যোক্তা আলম সেলিম বলেন , শহীদ মিনার নির্মাণ কার্যকর অনেক ঘাট-পতিঘাত এড়িয়ে এটা বাস্তবায়ন করতে হয়েছে। নতুন প্রজন্মের কাছে বাংলা ভাষার ইতিহাসকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য এটা নির্মাণ করা হয়েছে। আগামী বছর থেকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হবে ইউনেস্কো সদর দপ্তরে , বাংলাদেশ দূতাবাস ফ্রান্স ,প্যারিসের স্থায়ী শহীদ মিনারে ও দক্ষিণ ফ্রান্সের সিটি তুলুজে নির্মিত ফ্রান্সের প্রথম স্থায়ী শহীদ মিনারে।
সূত্রঃ ডেইলি কাগজ নিউজ ডেস্ক